Tuesday, May 21, 2024
Google search engine
রকমারি তথ্যবারো বছরের মেয়ের পাকস্থলীটে মিলল আড়াই কেজি চুল!

বারো বছরের মেয়ের পাকস্থলীটে মিলল আড়াই কেজি চুল!

বারো বছরের মেয়ের পাকস্থলীটে মিলল আড়াই কেজি চুল! সাক্ষী থাকল শিয়ালদহের ইএসআই হাসপাতাল। হঠাত্‍ করেই মেয়েটির শরীর খারাপ হয়েছিল। খেলেই বমি হয়ে যেত৷ পেটে শুরু হত অসহ্য যন্ত্রণা। প্রথমটায় মনে হয়েছিল, এটা বুঝি

গ্যাসের সমস্যা। কিন্তু কাঁড়ি কাঁড়ি অ্যান্টাসিডেও উপশম না হওয়ায় বারো বছরের মেয়েটির এক্স-রে, এন্ডোস্কোপি, সিটি-স্ক্যান করা হয়। দেখা যায়, পাকস্হলীর মধ্যে বাসা বেঁধেছে পেল্লাই সাইজের এক টিউমার। অপারেশনের পর ডাক্তারদের চোখ কপালে। আড়াই কেজির টিউমারটি আসলে একতাল চুল।
নেহা সাউ। বাড়ি বালিগঞ্জের বন্ডেল গেট লাগোয়া লালকুঠি এলাকায়। নেহার বাবা আউধ সাউ হিন্দুস্তান ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে কর্মরত। আউধবাবু জানালেন, বছরখানেক আগে মেয়ের শরীর হঠাৎ খারাপ হয়। পেট ব্যথা শুরু হয় ৷ মহিলাঘটিত কোনো সমস্যা ভেবে একজন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যাই। তিনি গ্যাসের ওষুধ দেন। কিন্তু তাতে ব্যথা কমেনি। পরে এক্স-রে করে ধরা পড়ে পেটের মধ্যে একটি টিউমারের মতো হয়েছে। আর দেরি করিনি ৷মেয়েকে নিয়ে শিয়ালদহ ইএসআইতে চলে আসি। সপ্তাহ দুয়েক আগে ডাক্তারবাবুরা ভর্তি নিয়ে নেন মেয়েকে।
সোমবার ডা. সোমনাথ ঘোষ, ডা. সুপ্রিয় রায় ও ডা. বিজয় বিশ্বাসরা অপারেশন করেন। কিন্তু নেহার পেটে অত চুল এলো কী করে? আউধবাবু জানালেন, ছোট থেকেই নেহার চুল ছেঁড়ার বাতিক ছিল। বদ অভ্যাস ফেরাতে মা শীলা সাউ কয়েকবার মারধরও করেছেন নেহাকে। মায়ের মারে কয়েকদিন আগে মাথা ফেটেছে নেহার। তবু নিজেকে শোধরাতে পারেনি ষষ্ঠ শ্রেণীর এই ছাত্রী। এই পর্যন্ত ঠিক ছিল। এমন বদ অভ্যাস খুব একটা বিরল নয়। চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় এই রোগের একটা নামও আছে, ট্রাইকোটিলোম্যানিয়া। কিন্তু নেহার ক্ষেত্রে সমস্যা ছিল আরো গভীর ৷ চুল ছিঁড়ে নেহা তা খেয়ে ফেলত।

বছরের পর বছর সবার অলক্ষে এই কাজটা সে করেছে৷ সেই চুলই পাকস্হলীতে গিয়ে হজমরসের সঙ্গে মিশে টিউমারের আকার নিয়েছে৷ তার জন্যই খেলে পেট ব্যথা, বমি হত নেহার। জানালেন শিয়ালদহ ইএসআই হাসপাতালের সুপার ডা. প্রদীপ ভট্টাচার্য। জানা গিয়েছে, অপারেশন সফল হয়েছে। নেহা যাতে চুল খাওয়ার বদ অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসতে পারে তার জন্য বিশিষ্ট সাইকিয়াট্রিস্ট ডা. পৃথ্বীশ ভৌমিকের তত্ত্ববধানে কাউন্সেলিং শুরু হয়েছে। পৃথ্বীশবাবু জানালেন, শিশুদের মধ্যে অখাদ্য খাওয়ার প্রবণতা বিরল নয়। কেউ মাটি খায়, কেউ সাবান। কেউ মাটির ভাড় তো কেউ দেওয়ালের চুন। নেহা চুল খেত। এটা এক ধরণের মানসিক রোগ। পোশাকি নাম পিকা। উদ্বেগ থেকেই এই রোগের জন্ম হয়৷ পড়াশোনা বা অন্য কোনও বিষয়ে নেহার মনের উপর সম্ভবত চাপ সৃষ্টি হয়েছিল। সেখান থেকেই এই রোগের উত্স।
সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন

আরও পড়ুন-

এমন আরও কিছু আর্টিকেল

Google search engine

জনপ্রিয়