ফেসবুকের পরিসংখ্যান অনুসারে, ১০০% ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৬৪% ব্যবহারকারী ছাত্র-ছাত্রী। সারাদিন নেটে থাকার কারনে অনেকে পড়াশোনার জন্য কম সময় ব্যয় করে। কিন্তু প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীর মনেই একটা আকাঙ্খা থাকে ভালো রেজাল্ট করার। তাই মুক্তমঞ্চ.কম গবেষনা করে বের করলো অল্প পড়াশোনা করে পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করার টিপস । আশাকরি এতে সকল ধরনের ছাত্র-ছাত্রীরা লাভবান হবেঃ
(১) পরিকল্পনা করুনঃ
পরিকল্পনা ছাড়া এই পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত যত কাজ হয়েছে তারশতকরা ৯৮% কাজই সফলতা অর্জন করতে পারেনি। তাই আজ থেকে সুষ্ঠুপরিকল্পনা করে ফেলুন। যেমন-আপনি প্রতিদিন প্রতিটা বইয়ের ১টি করে প্রশ্নপড়বেন।
(২) শুধু পড়ুন, মুখস্থ করবেন নাঃ
সবার মুখস্থ বিদ্যা ভালো না। তাই যেটা পড়বেনসেটা শুধু পড়ুন কিন্তু মুখস্থ করতে চেষ্টা করবেন না। বুঝে বুঝে পড়ার চেষ্টা করুন।অনেক সময় এমন হয় শুধু পড়ার কারনে আপনার পুরো বিষয়টা পরীক্ষার হলে মনেড়ে যায়। জোর করে যদি মুখস্থ করতে যান তাহলে ভুলে যেতে পারেন। যেটা খুবই স্বাভাবিক। দেখবেন খবরের কাগজ কিন্তু আমরা মুখস্থকরি না, কিন্তু খবরগুলো ঠিকই আমাদের মনে থাকে। তাই প্রতিদিন অল্প পড়াশোনা করার অভ্যাস করুন।
(৩) পড়ার সময় লিখে পড়ার চেষ্টা করুনঃ
যে প্রশ্নটি পড়বেন সেটার উত্তরগুলো খাতা কলমের সাহায্যে লিখে লিখে পড়ার চেষ্টা করুন। তাহলে পড়াও মনে থাকবে, চোখের সাহায্যে অন্তরেও গেঁথে যাবে। বেশী লেখার দরকার নেই। মেইন পয়েন্টগুলো দুচার লাইন করে লিখুন।
(৪) সময়ের কাজ সময়ে করুনঃ
পড়ালেখায় সফলতা পেতে হলে সময়ের কাজ আপনাকে সময়ে করতেই হবে। বেশীক্ষন পড়তে ভালো লাগেনা? ঠিক আছে। তাহলে প্রতিদিন ২ ঘন্টা ফিক্সড করে নিন। ওই ২ ঘন্টাই পড়বেন। ওই সময়ে অন্য কোন কাজ করবেন না। তাই প্রতিদিন অল্প পড়াশোনা করার অভ্যাস করুন।
(৫) প্রতিযোগী ঠিক করে নিনঃ
রেসের মাঠে একা দৌড়ালে যেমন কোন লাভ নেই, ঠিক তেমনি পড়াশোনায়ও ভালো রেজাল্ট করতে প্রতিযোগী সেট করার কোন বিকল্প নেই। আপনার থেকে দুই ধাপ ভালো কোন ছাত্র-ছাত্রীকে টার্গেট করুন। মনে মনে বলুন নেক্সট পরীক্ষায় আমি ওর থেকে কমপক্ষে ২০ মার্কস বেশী ওঠাবো বা ২ পয়েন্ট বেশী অর্জন করবো। তাই প্রতিদিন অল্প পড়াশোনা করার অভ্যাস করুন।
(৬) আড্ডা কমিয়ে দিনঃ
আমি কিন্তু বলিনি একদম আড্ডা দিবেন না! কিন্তু আড্ডা দেয়ার সময় কমিয়ে দিন। এখন পর্যন্ত আড্ডায় কোন উৎপাদনমুখী কিংবা ভালো টপিকস নিয়ে আলোচনা হয় না। কি নিয়ে আলোচনা হয় তা আমি আপনি আমরা সবাই
জানি। প্রতিদিন যদি ২ ঘন্টা আ্ড্ডা দেয়ার অভ্যাস থাকে তাহলে সেটা আধা ঘন্টা কমিয়ে দিন। এভাবে আড্ডা দেয়া আস্তে আস্তে কমিয়ে দিন। তাই প্রতিদিন অল্প পড়াশোনা করার অভ্যাস করুন।
(৭) ভালো ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে মিশুনঃ
কথায় আছে সৎসঙ্গে স্বর্গবাস, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ। আপনি যদি এভারেজ কিংবা খারাপ ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে মেশেন তাহলে আপনার উপরে কিন্তু খারাপ প্রভাবই পরবে। ভালো প্রভাবের জন্য ভালো ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে মিশুন, কথা বলুন, প্রয়োজনে তাদের সাথে আড্ডা দিন।
(৮) ধর্মকর্মে মন দিনঃ
শুধু পরীক্ষার আগে স্রষ্টার নাম জপে কোন ফায়দা হয় না। প্রতিদিন অল্প অল্প করে ধর্ম কর্মে মন দিন। আস্তে আস্তে বাড়িয়ে ফেলুন। তাহলে স্রষ্টাও আপনার উপরে খুশি হবেন। শুধুমাত্র্র বাবা-মা কিংবা টিচারের মন জয়ের জন্য কাজ করলে হবে না। তাই প্রতিদিন অল্প পড়াশোনা করার অভ্যাস করুন।
(৯) নির্দিষ্ট সময়ে পড়ার অভ্যাস করুনঃ
নির্দিষ্ট সময়ে ক্ষুধা লাগলে আপনার কেমন লাগে?? ঠিক তেমনি প্রতিদিন অল্প পড়ুন বা বেশী পড়ুন একটা নির্দিষ্ট সময়ে পড়ার অভ্যাস তৈরি করুন। এলোপাতারি সময়ে না পড়ে, নিদির্ষ্ট সময়ে যেমন রাত ৮ থেকে ১২টা বা রাত ১০টা পর্যন্ত এই সময়টা শুদুই পড়ুন। অন্যকোন কাজ করবেন না।
(১০) টিভি দেখা কমিয়ে দিনঃ
ছাত্র-ছাত্রীর অন্যতম কাজ হচ্ছে টিভি দেখা। সচরাচর সবাই টিভি দেখে নিজেকে নায়ক নায়িকা বা গায়ক গায়িকা ভাবতে পছন্দ করে। কিন্তু মনে রাখবেন টিভিতে যা কিছু দেখি সবই কিন্তু প্রফেশনাল লোকজন করে। তাদের পেশাই হচ্ছে ওইটা করা। তাই আপনি যদি তাদের মতো কল্পনা করেন কিন্তু পড়ালেখা না করেন তাহলে কিন্তু কোন কাজ হবে না।
আরো অনেক টিপস আছে কিন্তু বেশী দিলে ভুলে যাবেন। তবে একটা কথা মনে রাখবেন আপনার পড়াশোনার পরিমানের উপর নির্ভর করবে আপনার পরবর্তী কর্ম জীবনের সফলতা।