হারনাম কাউর, ২৪ বছরের নারী। তিনি মেকআপ করতে এবং নখ পালিশ করতে ভালবাসেরন। ট্যাটুতে তার ভক্তি কম নয়। মোট কথা তিনি তার নারীত্বকে খুবই উপভোগ করেন। কিন্তু প্রথমবার দেখলে কেউ তাকে নারী বলে মনে করতে পারবেন না। কারণ তার মধ্যে আছে পুরুষালি চিহ্ন আছে । কারণ তার মুখে আছে দাঁড়ি।
এই দাঁড়ি কিন্তু নকল নয়, আসল। তিনি পলিসিস্টিক ওভারি নামের একটি রোগে ভুগছেন। এই রোগ তার মুখে এই দাঁড়ি গজানোর ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে। তার শরীরেও আছে অতিরিক্ত লোম। তাই প্রথম দেখায় তাকে পুরুষই মনে হয়। শিখ ধর্মের এই নারী বিষয়টি টের পান ১১ বছর বয়সে। তখন থেকেই তিনি তার শরীরের অতিরিক্ত লোম গজাতে দেখেন। এরপর তিনি লোম তোলার সব কৌশল যেমন ওয়াক্সিং,শেভিং এবং হেয়ার রিমোভাল ক্রিম ব্যবহার করেন। ১৬ বছর বয়সে তিনি শিখ ধর্মে দীক্ষা নেন।
এরপর তিনি লোম দূর করার কাজটিও বন্ধ রাখেন। আর এরপর থেকেই তার মুখ এবং শরীরের লোম বাড়তে থাকে। তিনি এ নিয়ে ভীষণ দুশ্চিন্তায় ছিলেন এবং একবার না কি আত্মহত্যাও করতে চেয়েছিলেন। কারণ তার স্কুল এবং সর্বোপরি সমাজ থেকে ব্যাপক তিরস্কারের শিকার হতেন। তিনি বলেন,আমি নিজেকে লুকিয়ে রাখতাম এবং জনসম্মুখে যাওয়া বন্ধ করে দিলাম। আমার বেডরুমই ছিল আমার স্বর্গ। আমি নিজেকেই নিজেকে নিয়ে কাউন্সিল করতে শুরু করলাম।
আমি নিজেকের মনকে বলতে শুরু করলাম : যে শক্তি দিয়ে তুমি তোমার জীবন শেষ করতে যাচ্ছো সেই শক্তি তুমি তোমার জীবনের পরিবর্তনের জন্য ব্যয় কর যা তোমার জীবনে সন্তোষজনক কিছু এনে দেবে। আমি আমার শরীরকে ভালবাসতে শুরু করলাম এবং সেটা কোনো শর্ত ছাড়াই। তিনি তার আত্মহত্যা প্রবণতা, হতাশা এবং ক্ষতিকর সব আচরণ অতীতে কাছে ফিরিয়ে দিলেন। আর সমাজে তিনি তার দাঁড়ি নিয়ে একটি ইতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরির চেষ্টা করলেন। আমি আমার দাঁড়ি ধর্মের কারণে রাখতে শুরু করলাম। আর এখনতো আমি বিশ্বকে আমার দাঁড়ি দিয়ে ভিন্ন অনুভূতি দিতে পারছি এবং নিজেকে অনেক আত্মপ্রত্যয়ী মনে হচ্ছে। এখন আমি আমার দাঁড়ি নিয়ে নিজেকে গর্বিত মনে করি। –