Sunday, October 13, 2024
Google search engine

অকাল গর্ভপাত সম্পর্কে আপনার একেবারেই অজানা ১০টি তথ্য

সব গর্ভধারণ নয় মাস (৪০সপ্তাহ) স্থায়ী হয় না এবং সব ক্ষেত্রে শিশুর জন্ম হয় না৷ কোনো কোনো ক্ষেত্রে গর্ভ নিজে নিজেই নষ্ট হয়ে যায়, একে বলা হয় গর্ভপাত বা স্বতঃস্ফূর্ত গর্ভপাত৷ সাধারণত স্বতঃস্ফূর্ত গর্ভপাত, কৃত্রিম উপায়ে গর্ভপাত, ওষুধ প্রয়োগে গর্ভপাত, শল্য/যন্ত্র প্রয়োগে গর্ভপাত ইত্যাদি কারণে একটি ভ্রূণ নষ্ট হয়ে থাকে।
চলুন একে একে জেনে নেয়া যাক গর্ভপাত নিয়ে কিছু অজানা বিষয় যা আপনি জানেন না।

১। সারা বিশ্বে গর্ভপাতের হার আপনার ধারনার চেয়েও বেশিঃ
আপনি যদি মনে করে থাকেন গর্ভপাত একটি দুর্ঘটনা তবে অবশ্যই ভুল করবেন, গর্ভপাত অনেক সময় প্রাকৃতিক কারণেও হয়ে থাকে। সারা বিশ্বে ১৫% মা গর্ভপাতের শিকার।

২। গর্ভধারণের শুরুর দিকেই গর্ভপাত ঘটার সম্ভাবনা বেশিঃ
একজন মা গর্ভধারণের শুরুর দিকে সব সময় সাবধান থাকা উচিৎ, কারণ এই সময়েই গর্ভপাত বা মিসকেরেজ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। সাধারণত ডাক্তাররা হবু বাবা মা কে বলে থাকেন যাতে ২০ সপ্তাহের আগে প্রেগন্যান্সির খবর সবাইকে না বলা হয়, এমনকি গ্রামেও এটি সাংস্কৃতিক ভাবেই প্রচলিত। কারণ, সাধারনত গর্ভধারণের ১২ সপ্তাহের মধ্যেই গর্ভপাত হবার আশংকা বেশি থাকে। এর পরবর্তীতে রিস্ক কমে আসে।

৩। গর্ভপাত হয়ে যেতে পারে আপনার অজান্তেইঃ
আপনি জানেন কি আপনার অজান্তেই গর্ভপাত হয়ে যেতে পারে? গর্ভধারণের প্রথম ১০ দিনের মাথায়ই আপনার অজান্তেই মিসক্যারেজ হয়ে যেতে পারে। রক্তপাত এর একটা খুব সাধারণ লক্ষণ। নারীরা একে পিরিয়ড ভেবে ভুল করতেই পারেন। কিন্তু যদি কখনো অতিরিক্ত রক্তপাত হয়, তবে ঝুঁকি না নিয়ে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন। গর্ভপাত না ঠেকাতে পারলেও অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা ও সংক্রমণ এড়াতে পারবেন।

৪। গর্ভপাতে মায়ের কোন দোষ নেইঃ
আমাদের সমাজে একটি ধারণা রয়েছে মায়ের অসাবধানতায় অকাল গর্ভপাত ঘটে, আসলে এটি হয় মূলত ভ্রুণের অস্বাভাবিকতার কারণে, এটা আগে থেকে নির্ণয় করা কঠিন আর এতে মায়ের কোন দোষ নেই। অতএব, মানসিকতা বদলান।

৫। বয়স্ক মহিলাদের ক্ষেত্রে গর্ভপাতের ঝুঁকি বেশিঃ
আপনি যদি একটু বয়স্ক হয়ে থাকেন তবে আপনাকে সাবধান হতে হবে। মনে রাখবেন বয়স্ক মহিলাদের ক্ষেত্রে মিসক্যারেজের ঝুঁকি বেশি। কেননা ডিম্বানুর বয়েসের কারণে জিনগত অস্বাভাবিকতার হার বেড়ে যায়।
৬। যৌনতার সাথে সম্পর্ক নেইঃ
আপনার যৌন জীবন, ব্যায়াম বা নিয়মিত হালকা কাজের সাথে অকাল গর্ভপাতের তেমন কোন সম্পর্কে নেই। তবে একটু সাবধান থাকা ভালো। কারণ, গর্ভধারণের প্রথম তিন মাসে আনপ্রোটেকডেট সেক্স করলে গর্ভপাতের হার বাড়ে।
৭। গর্ভপাত একাধিকবার হতে পারেঃ
মনে রাখবেন একজন নারীর জীবনে কেবল একবার গর্ভপাত হবে তা কিন্তু নয়! একবার গর্ভপাত হলে আরো গর্ভপাত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, ফলে গর্ভপাত একবার হলে, ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।

৮। ফার্টিলিটির চিকিৎসা গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়াতে পারেঃ
যাদের সন্তান হচ্ছেনা মনে করে অতি আগ্রহী হয়ে বিশেষ চিকিৎসা গ্রহণ করে থাকেন তাদের ক্ষেত্রে গর্ভপাতের সম্ভাবনা অনেক বেশি। সন্তান ধারণের জন্যে বেশি বয়েসে ফার্টিলিটির চিকিৎসা ও ঔষধ সেবনের কারণেও গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়তে পারে।

৯। ধূমপান, প্রত্যক্ষ হোক বা পরোক্ষঃ
প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ধূমপানের কারণেও হতে পারে গর্ভপাত। তাই নিজে ধূমপান তো করবেনই না এবং কোন ধূমপায়ীর আশেপাশে থাকা থেকে বিরত থাকুন।

১০। অতিরিক্ত ওজনের কারণে হতে পারে গর্ভপাতঃ
অতিরিক্ত ওজনের কারণে নানা স্বাস্থ্য সমস্যার পাশাপাশি হতে পারে গর্ভপাতও! যেমন ডায়াবেটিস, যা অতিরিক্ত ওজনের কারণেই হয়ে থাকে। এটি গর্ভপাতের একটি অন্যতম প্রধান কারণ।

গর্ভপাতের অভিজ্ঞতা যেকোন নারীর ক্ষেত্রেই একটি দুঃখজনক বিষয়। তাই সাবধান থাকুন, সুস্থ থাকুন, সুস্থ রাখুন আপনার অনাগত অতিথিকেও!

আরও পড়ুন-

এমন আরও কিছু আর্টিকেল

Google search engine

জনপ্রিয়