Saturday, July 27, 2024
Google search engine
সুস্থ থাকুনকীভাবে দীর্ঘ আয়ু লাভ করবেন

কীভাবে দীর্ঘ আয়ু লাভ করবেন

আপনারা সবাই ভালো আছেন তো? আজ আমরা আলাচনা করবো দীর্ঘ জীবন লাভের উপায়
সম্পর্কে।যুক্তরাজ্যে অত্যন্ত সুপরিচিত চিকিৎসক ড. ডন হারপার। মানুষের স্বাস্থ্যের উপর টেলিভিশনে অনুষ্ঠান করে তিনি জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। তার চিকিৎসা সংক্রান্ত জ্ঞান দর্শকদের কাছে বিপুল প্রশংসিত হয়েছে। সম্প্রতি তিনি একটি বই লিখেছেন। বাইটির নাম ১০১ বছর সুস্থ হয়ে বাঁচুন। নিরোগ দেহে দীর্ঘ আয়ু লাভের জন্যে এখানে তার দেওয়া কিছু টিপস তুলে ধরা হলো ।
প্রতিদিন ২ লিটার পানি পান করুন
পানির অপর নাম জীবন। আপনি কি প্রতিদিন যথেষ্ট খানি পান করে থাকেন? বিশেষজ্ঞের মতামত হলো, একজন সুস্থ মানুষের প্রতিদিন আট গ্লাস পানি পান করা উচিত
আট গ্লাস পানির পরিমাণ দাঁড়াবে মোটামুটি ২ লিটার।পর্যাপ্ত পানি আমাদের শরীরের জন্য অত্যাবশ্যকীয়। পর্যাপ্ত পানি হৃদরোগ ও রক্তনালীর রোগ প্রতিরোধে স্পষ্ট ভূমিকাও পালন করতে সক্ষম।
ধূমপান থেকে বিরত থাকুন
ধূমপান আমাদের শরীরের কোনো উপকার করে না; শুধু অপকারই করে। বাংলাদেশের একজন নামকরা চিকিত্সককে একবার টিভিতে বলতে শুনেছিলাম যে, ধূমপানের ফলে পায়ের নখ থেকে শুরু করে মাথার চুল পর্যন্ত হেন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নেই যা ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। গবেষণায় প্রমাণিত যে, ধূমপানের সময় শরীরের স্বাভাবিক রক্তচলাচল বাঁধাগ্রস্ত হয়। তাই ধূমপায়ী মানুষ সহজেই হৃদরোগ ও রক্তনালীর রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তা ছাড়া, যারা ধূমপান করেন, তাদের ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা অনেক বেশি। পরোক্ষ ধূমপানের কথাও আজকাল বেশ বলা হচ্ছে। সরাসরি ধূমপান না-করেও, আশেপাশের মানুষের মুখ থেকে নির্গত ধোঁয়া শ্বাসের সঙ্গে গ্রহণ করাকে বলে পরোক্ষ ধূমপান। পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতিও কম নয়। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, পরোক্ষ ধূমপানের ফলে বিশেষ করে শিশুরা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। অস্ট্রেলিয়ার তাসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন গবেষক বলেছেন: ‘যেসব পিতামাতা নিজ শিশুসন্তানের ভবিষ্যত নিয়ে ভাবেন, তাদের উচিত ধূমপান পুরোপুরি ত্যাগ করা।
ঠিক মতো ঘুমান
রাতে ঠিক কতোটুকু সময় ঘুমাচ্ছেন এবং সেই ঘুম কেমন হচ্ছে সে বিষয়টি সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্যে খুব গুরুত্বপূর্ণ। খুব বেশি ঘুম যেমন খারাপ তেমনি অল্প ঘুমও খারাপ। ড. হারপার বলেছেন, এই কারণে পরিমাণ মতো ঘুমাতে হবে। যারা অল্প ঘুমিয়ে বড়াই করে বলছেন ‘আমার তো কিছু হচ্ছে না’ তারা বুঝতে পারছেন না সেই দিনগুলো সামনে অপেক্ষা করছে। একেক জনের জন্য ঘুমের প্রয়োজন একেক রকম। যেটুকু ঘুম আপনার ক্লান্তি দূর করে নতুন করে দিনটা শুরু করতে সাহায্য করে সেটাই আপনার পর্যাপ্ত ঘুম। ঘুম ঘুম চোখে কাজে গেলে কিছুই ঠিকমতো হবে না। এটা শরীর ও মনের উভয়ের জন্য ক্ষতিকর। পর্যাপ্ত ঘুম হচ্ছে ফোনের ব্যাটারি পুরোপুরি চার্জ দিয়ে নেয়ার মতো।

হাঁটাচলা করুন

আমাদের অনেকেই প্রচুর সময় বসে থেকে কাটাই। এটা স্বাস্থ্যের জন্যে ভালো নয়। সুসংবাদ হচ্ছে যে এজন্যে আমাদের ম্যারাথন রানার হতে হবে না। যেটা করতে হবে সেটা হলো শরীরটাকে একটু নাড়ানো- মানে হাঁটাচলা করা। হারপার তার বই লিখতে গিয়ে এরকম বহু মানুষের সাথে কথা বলেছেন যারা এক শতাব্দী কাল ধরে বেঁচে আছেন। তিনি দেখেছেন, তাদের সবার মধ্যেই একটি জিনিসের মিল আছে। সেটা হলো, তারা প্রচুর হেঁটেছেন।
লিভারকে বিশ্রাম দিন
যাদের মদ্যপানের অভ্যাস আছে তাদের কাছে বিষয়টা খুব আনন্দের। কিন্তু ড. হারপার বলছেন, এটাকে নেশায় পরিণত করা মানেই বিপদ। তিনি বলেন, আপনার লিভারকে একটু বিশ্রাম দিতে হবে। পরিবর্তে যত খুশি পানি পান করুন। কিন্তু লিভারের জন্য চাপ সৃষ্টিকারী পানীয় যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন।
নিজের জিন সম্পর্কে জানুন
বিশেষ কোনো অসুখে পড়ার প্রবণতা হয়তো আপনার মধ্যে বেশি থাকতে পারে। কিন্তু ড. হারপার বলছেন, আপনার পরিবারের বা বংশের অন্যান্য সদস্যদের অসুখ বিসুখের ইতিহাস জানা থাকলে সেটা আমাদেরকে সুস্থ ও সুন্দর জীবন যাপন করতে সাহায্য করতে পারে। তিনি বলেন, জিন শরীরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কোনো কোনো জিনের কারণে আমরা বিশেষ একটি রোগে আক্রান্ত হচ্ছি। বংশের কারো কোনো হয়েছিল কিংবা কোনো রোগে কার মৃত্যু হয়েছিল সেটা মাথায় রাখা উচিত। একই ধরনের রোগ যদি নিজের কাছে আসে তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
কার্বোহাইড্রেট সচেতনতা জরুরি
ভাত ও রুটির মতো কার্ব পরিহার করা আজকালকার দিনে হয়তো একটা ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু ডা. হারপার বলছেন, ব্যালেন্সড ডায়েটের জন্যে আমাদেরকে এসবও খেতে হবে। খুব বেশি আনন্দিত হবার কিছু নেই। এখানেও কিছু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমি সবসময় রিফাইন বা মসৃণ কার্ব না খেয়ে বরং একটু জটিল ধরনের (মোটা আটার) কার্ব খাওয়ার কথা বলবো। যেমন বাদামি চাল, আস্ত শস্য দানা সমেত মোটা আটার রুটি ইত্যাদি।
প্রতিদিন হাসুন
সুস্থ হয়ে বেঁচে থাকা অত্যন্ত আনন্দের-এটা মনে রাখতে হবে। এটাকে দৈনন্দিন টুকিটাকি কাজের অংশ হিসেবে দেখলে হবে না। এখানে মানসিকতার একটা পরিবর্তন প্রয়োজন। বইটি লিখতে গিয়ে গবেষণা করার সময় তিনি একজন বিজ্ঞানীর করা একটি গবেষণা খুঁজে পেয়েছেন যেখানে তিনি দীর্ঘ আয়ুর সাথে হাসিখুশির থাকার একটা সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছেন। তিনি লিখেছেন, এমন কিছু করুণ যা প্রতিদিন আপনাকে হাসিখুশি রাখবে।
চাপমুক্ত থাকার চেষ্টা করুন
আমাদের অনেকেই নানা রকমের চাপের মধ্যে থাকি বা মানসিক চাপে ভুগি। এর একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়ে আমাদের স্বাস্থ্যের উপর। সেটা শারীরিক ও মানসিক দু’ধরনের স্বাস্থ্যেরই ক্ষতি করে। তাই চাপ থেকে কিভাবে মুক্ত থাকা যায় তার উপায় প্রত্যেককে আলাদা আলাদাভাবে খুঁজে নিতে হবে। এজন্যে একজন চিকিৎসক কিংবা এসংক্রান্ত অন্যান্য পেশাজীবীদের কাছ থেকেও সাহায্য নেওয়া প্রয়োজন।

আরও পড়ুন-

এমন আরও কিছু আর্টিকেল

Google search engine

জনপ্রিয়